আজ ভাবলেন চুলে রং করব আর কালকে রং করে নিলেন এভাবে করলে চুলের ক্ষতি হবে।
রং করবেন ভাবার পর কিছুদিন পর চুলে রং করুন। আর রং করার আগে চুলকে কিছুটা যত্ন করে তৈরি করে নিন।
রাতে ঘুমাতে যাবার আগে চুলে ভালো করে তেল দিন। এতে চুলে পুুষ্টি যোগাবে।
সপ্তাহে একবার করে হেয়ার মাস্ক বা হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন।
এই চুলে কোনওরকম হিট না দেয়া ভালো। আর সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি চুলে রং করার আগের দিন চুলে খাঁটি বা কোল্ড প্রেসড নারিকেল তেল লাগিয়ে নিতে পারেন।
এতে চুলে রং করলেও চুল সরাসরি কালারের সংস্পর্শে আসে না।
২. আপনার চুলের উপযুক্ত রং বেছে নিন
চুলের রং হিসেবে বাজারে অনেক কিছুই বিক্রি হয়। কিন্তু আপনাকে বেছে নিতে হবে সেই জাতীয় হেয়ার কালার যা আপনার চুলের কোনও ক্ষতি করবে না।
কেনার আগে দেখে নেবেন তাতে যেন অবশ্যই অ্যামোনিয়া না থাকে!!
রং করার সময়ে উপযুক্ত ‘ডেভেলপার’ ব্যবহার করুন। ডেভেলপার হল এক ধরনের ক্রিম জাতীয় জিনিস যাতে থাকে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড।
এটি চুলে রং ধরে রাখতে সাহায্য করে। আপনাকে অবশ্যই ২০ বা ৩০ ভলিউম ডেভেলপার ব্যবহার করতে হবে। এতে চুলের ক্ষতি কম হবে।
৩. সঙ্গে সঙ্গে শ্যাম্পু করা যাবে না!
চুলে করা হয়ে গেলেই শ্যাম্পু করবেন না। যদি দুইদিন পরে শ্যাম্পু করেন তাহলে দেখবেন সুন্দর রং বসে গেছে আর তাড়াতাড়ি উঠে যাবে না। তাই ঘন ঘন রং করতেও হবে না।
আর দুইদিন শ্যাম্পু না করলে যে সাধারণ তেল মাথার তালুতে তৈরি হবে তা চুলকে স্বাভাবিক সুরক্ষা দেবে। রং করার জন্য চুল শুষ্ক, রুক্ষ হয়ে যাওয়ার সমস্যা কমবে।
৪. শ্যাম্পুও বেছে কিনতে হবে
চুলের রঙের ক্ষেত্রে যেমন বাছাই দরকার, তেমনই শ্যাম্পুর জন্যও।
কালার করা চুলে যে কোনও শ্যাম্পু করা যায় না। তার জন্য কালার প্রোটেক্টিভ শ্যাম্পু আছে।
কালার প্রোটেক্টিভ শ্যাম্পু আর কন্ডিশনার চুলের রং সহজেই উঠিয়ে দেবে না!শ্যাম্পুর ক্ষেত্রে সালফেট-ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করাই ভালো।সালফেট-ফ্রি শ্যাম্পু চুলের ন্যাচারাল তেল উৎপাদনে কোনও সমস্যার সৃষ্টি করে না। এতে চুল ভালো থাকে।
৫. ঘন ঘন চুল পরিষ্কার নয়
একটা কথা মনে রাখা খুব দরকার। কালার করা চুল ভালো রাখার জন্য চুলের স্বাভাবিক তেল উৎপাদন বজায় রাখতে হবে।
আর তার জন্য ঘন ঘন শ্যাম্পু করা বন্ধ করতে হবে। যদি আপনি সপ্তাহে চার দিন শ্যাম্পু করে থাকেন, এবার থেকে সেটা দু’দিন করুন। এতে রঙ অনেক দিন বজায় থাকবে।
আর চুলের স্বাভাবিক তেল উৎপাদনও ঠিক থাকবে। এতে স্ক্যাল্পের পিএইচ ব্যাল্যান্স বজায় থাকবে।
ভালো চুলের জন্য এটি কিন্তু খুব দরকার। আপনি কিন্তু অনায়াসেই ড্রাই শ্যাম্পুও ব্যবহার করতে পারেন।
৬. ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করুন
গরম জলে চুল ধুলে চুলের কিউটিকল দুর্বল হয়ে যায়।
এতে রং উঠে যেতে শুরু করে। শুধু তাই নয়। চুল ময়েশ্চার হারিয়ে ফেলে। তাই চুল হয়ে যায় শুষ্ক আর রুক্ষ।
তাই সব সময়ে ঠাণ্ডা পানি চুল পরিষ্কার করুন।
এতে কিউটিকল মজবুত থাকবে। তাই রঙ থাকবে অনেক দিন।
যদি আপনি মাথায় ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে অল্প উষ্ণ পানি মাথায় দিয়ে অন্তত একবার ঠাণ্ডা পানি দিন মাথায়।
৭. একটি ঘরোয়া কন্ডিশনার পেস্ট
তেল, শ্যাম্পু এইসবের পাশাপাশি কন্ডিশনার নিয়মিত ব্যবহার করা কিন্তু উচিত। এই কন্ডিশনার বলতে শ্যাম্পু করার পর করার কন্ডিশনার না। এমন একটি জিনিস যা আপনার চুলের সার্বিক স্বাস্থ্য বজায় রাখবে। এটি এক ধরণের হেয়ার মাস্ক আপনি বলতে পারেন। এটি আপনি ঘরেই করতে পারেন।
উপকরণঃ
- ১টা পাকা কলা
- এক টেবিল চামচ অলিভ তেল
- চামচ দই এক চামচ
- এক চামচ মধু
পদ্ধতি
এই মিশ্রণ চুলে ভালো করে মাখিয়ে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। তারপর সালফেট-ফ্রি শ্যাম্পু দিয়ে শ্যাম্পু করে নিন। এটি সপ্তাহে একবার করে করুন।
এভাবে যদি আপনি কালার করা চুলের যত্ন নেন, তাহলে কিন্তু চুলের রঙও বজায় থাকবে। আর চুল থাকবে সুন্দর, সতেজ। যতই রঙ করুন না কেন, ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই নেই।
লেখা: মিথিলা, ছবি পিক্সবেয়